পৃষ্ঠাসমূহ

স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কোনো বই পড়ার সময় সাবধান। ছাপার ভুলের কারণে আপনার মৃত্যু হতে পারে। মার্ক টোয়েন, সাহিত্যিক।। আমি সব সময়ই বিখ্যাত ছিলাম, কিন্তু এত দিন সবাই জানত না। লেডি গাগা, আমেরিকান পপশিল্পী।। যদি আপনার পিতা-মাতার কোনো সন্তান না থাকে, তাহলে আপনারও নিঃসন্তান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ডিক ক্যাভেট, সাবেক আমেরিকান টিভি উপস্থাপক।। ঈশ্বর রোগ সারান কিন্তু সম্মানী নেন ডাক্তার। বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, আমেরিকান রাজনীতিবিদ, লেখক ও বিজ্ঞানী।। প্রলোভনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো তার বশবর্তী হওয়া। অস্কার ওয়াইল্ড, অভিনেতা ও সাহিত্যিক।। ভুল করার পরও কেউ হাসার অর্থ হলো, সে ইতিমধ্যে দোষ চাপানোর মতো অন্য কাউকে পেয়ে গেছে। রবার্ট ব্লক, সাহিত্যিক।। আমি অনেক বছর যাবৎ আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিনি। আমি তার বক্তব্যে বাধা দিতে চাই না। রডনি ডেঞ্জারফিল্ড, আমেরিকান কৌতুকাভিনেতা।। একজন পুরুষ বিয়ের আগ পর্যন্ত অসম্পূর্ণ থাকে এবং বিয়ের পর সে শেষ হয়ে যায়। সা সা গাবুর, হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান অভিনেত্রী।। সবার হৃদয়ে নিজের নামটি লিখুন, মার্বেল পাথরের দেয়ালে নয়। চার্লস স্পার্জান, ব্রিটিশ লেখক।। শুধু দালমা আর জিয়াননিনাই আমার বৈধ সন্তান, বাকিরা সবাই আমার অর্থ ও ভুলের ফসল। ডিয়েগো ম্যারাডোনা, সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।। কোনো পুরুষ যদি স্ত্রীর জন্য গাড়ির দরজা খুলে দেয়, তাহলে হয় গাড়িটা নতুন অথবা তার নতুন বিয়ে হয়েছে। প্রিন্স ফিলিপ, ব্রিটেনের রাজপুত্র।। আমি শিশুদের ভালোবাসি। কারণ আপনারা জানেন কি না জানি না, আমি নিজেও শিশু ছিলাম একসময়। টম ক্রুজ, হলিউড অভিনেতা।। জীবনের সব কাক্সিত বস্তুই হয় অবৈধ, কিংবা নিষিদ্ধ, কিংবা চর্বিযুক্ত, কিংবা ব্যয়বহুল, নয়তো বা অন্য কারও স্ত্রী। গ্রুশো মাক্স, সাহিত্যিক।। যতক্ষণ আপনি কোনো ছেলেকে অপছন্দ করবেন, সে আপনার জন্য তার সর্বস্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকবে। যখন আপনি তাকে ভালোবাসতে শুরু করবেন, ততণে সে তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। বিয়ন্স নোয়েলস, মার্কিন গায়িকা ও অভিনেত্রী।। আমার একটা অ্যালার্ম ঘড়ি আছে। মজার বিষয় হলো, সেটা কোনো আওয়াজ করে না। এটা আলো দেয়। যতই সময় যেতে থাকে, সেটি ততই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকে। একপর্যায়ে আলোর চোটে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমার সেই অ্যালার্ম ঘড়িটার নাম জানালা। জে লেনো, মার্কিন কৌতুক অভিনেতা।। আমাকে একটি গিটার দাও, আমি সেটা বাজাব। আমাকে একটি মঞ্চ দাও, আমি গাইব। আমাকে একটি অডিটরিয়াম দাও, আমি তা পরিপূর্ণ করে দেব। এরিক ক্যাপটন, সংগীতজ্ঞ।। আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে আমি কখনো প্রেমে পড়িনি, কয়েকবার পা রেখেছিমাত্র। রিটা রুডনার, মার্কিন কৌতুক অভিনেত্রী ও লেখিকা।। অবিবাহিত পুরুষদের ওপর উচ্চহারে কর বসানো উচিত। তারা কেন অন্যদের চেয়ে সুখে থাকবে? অস্কার ওয়াইল্ড, আইরিশ লেখক ও কবি।। বিয়ে হলো কল্পনার কাছে বুদ্ধির পরাজয়। দ্বিতীয় বিয়ে হলো আশার কাছে অভিজ্ঞতার পরাজয়। স্যামুয়েল জনসন, ব্রিটিশ লেখক।। বিয়ে হলো প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার মতোই প্রাকৃতিক, অযৌক্তিক এবং ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। লিসা হফম্যান, অভিনেতা ডাসটিন হফম্যানের স্ত্রী।। বুকমার্ক কেনার জন্য ডলার খরচ করার দরকার কী? ডলারটাকেই বুকমার্ক হিসেবে ব্যবহার করুন। স্টিভেন স্পিলবার্গ, চলচ্চিত্র পরিচালক।। আমার মনে হয়, যেসব পুরুষের কান ফুটো করা, তারা বিয়ের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত। কারণ, তারা ব্যথা সহ্য করেছে এবং অলংকারও কিনেছে। রিটা রুডনার, আমেরিকান কৌতুকাভিনেত্রী, লেখিকা ও অভিনেত্রী।। ডায়েটের প্রথম সূত্র হলো : খাবারটা যদি তোমার খেতে খুব ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই জিনিসটা তোমার জন্য তিকর হবে। আইজ্যাক আজিমভ, বিজ্ঞান কল্পকাহিনিকার।। আমার জন্মের পর আমি এত অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে পাক্কা দেড় বছর কথাই বলতে পারিনি। গ্রেসি অ্যালেন, মার্কিন কৌতুকাভিনেত্রী।। আমি কোনো দিন বিখ্যাত হতে পারব না। আমি কিচ্ছু করি না। কিছুই না। আগে দাঁত দিয়ে নখ কাটতাম। এখন তা-ও করি না। ডরোথি পার্কার, আমেরিকান রম্যলেখিকা।। আমি কখনোই আমার স্কুলকে আমার শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটাতে দিইনি। মার্ক টোয়েন, সাহিত্যিক।। সত্যবাদিতাই সর্বোত্তম পন্থা, যদি না আপনি একজন অসাধারণ মিথ্যেবাদী হতে পারেন। জেরোম কে জেরোম, ব্রিটিশ লেখক।। আলস্য পুরোপুরিভাবে তখনই উপভোগ করা সম্ভব, যখন হাতে প্রচুর কাজ থাকে। জেরোম কে জেরোম, ব্রিটিশ লেখক।। যখনই টিভিতে পৃথিবীর সব অনাহারি ও দরিদ্র শিশুকে দেখি, কান্না ধরে রাখতে পারি না। মনে হয়, ইশ, আমার ফিগারটাও যদি ওই রকম হতো। মারায়া ক্যারি, সংগীতশিল্পী।। সুষম খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো খাদ্য। ফ্র্যান লেবোউইটজ, মার্কিন লেখক।। ধূমপান মৃত্যু ডেকে আনে। যদি আপনার মৃত্যু ঘটে, তাহলে জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আপনি হারাবেন। ব্রুক শিল্ডস, অভিনেত্রী।। বক্সিংয়ে এ পর্যন্ত ইনজুরি, মৃত্যু-দুটোই হয়েছে। কোনোটিই তেমন মারাত্মক ছিল না। অ্যালান মিন্টার, বক্সার।। অন্যের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে সব সময় যাওয়া উচিত। তা না হলে তারাও আপনার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে আসবে না। ইয়োগি বেরা, বেসবল খেলোয়াড়।। এমন কাজ তোমার করার দরকার নেই, যেটা আগামীকাল অন্যের ঘাড়ে এমনিতেই চাপবে। ডেভিড ব্রেন্ট, অভিনেতা।। আমাকে কোনো প্রশ্ন কোরো না, তাহলে আমাকেও কোনো মিথ্যা বলতে হয় না। ওলিভার গোল্ডস্মিথ, আইরিশ লেখক ও কবি।। মডেলরা হলো বেসবল খেলোয়াড়দের মতো। আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিপুল অর্থের মালিক হই, কিন্তু বয়স ৩০ হতে না হতেই আবিষ্কার করি যে আমাদের উচ্চশিক্ষা নেই, কোনো কিছু করারই যোগ্যতা নেই। কিন্তু আমরা খুবই বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। এমন সময় সবচেয়ে বুদ্ধির কাজ হলো কোনো মুভিস্টারকে বিয়ে করে ফেলা। সিন্ডি ক্রাফোর্ড, মডেল।। ফিলাডেলফিয়ার পথঘাট খুবই নিরাপদ। শুধু মানুষই সেগুলোকে অনিরাপদ বানিয়ে রেখেছে। ফ্রাংক রিজো, আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার সাবেক মেয়র।। সব সময় মনে রাখবেন, আপনি অনন্য। ঠিক আর সবার মতো। মার্গারেট মেড, নৃতত্ত্ববিদ।। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাগের মাথায় কখনো বাচ্চাদের মারবেন না। আমার প্রশ্ন হলো, তাহলে কখন মারব? মনে যখন আনন্দ থাকে তখন? রোজেইন বার, লেখক।। টেলিভিশন আমার কাছে খুবই শিক্ষামূলক। বাড়ির সবাই যখন টেলিভিশন দেখে, আমি তখন অন্য ঘরে গিয়ে বই পড়তে শুরু করি। গ্রুশো মার্ক্স, কৌতুকাভিনেতা।। হাল ছেড়ো না। একটা ডাকটিকিটকে দেখো। নিজ গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত তা একটি খামের সঙ্গেই লেগে থাকে। জশ বিলিংস, লেখক।। কেউ মহৎ হয়েই জন্মায়, কেউ অনেক চেষ্টা করে মহৎ হয়। বাকিরা পাবলিক রিলেশন অফিসারদের ভাড়া করে। ড্যানিয়েল জে বুরর্স্টিন, ইতিহাসবিদ।। বাস্তব ও কল্পকাহিনির মধ্যে পার্থক্য হলো, কল্পকাহিনিকে সব সময় যুক্তিপূর্ণ হতে হয়। টম ক্যান্সি, লেখক।। অস্ট্রেলিয়ার মানুষের অন্যতম প্রিয় শখ হচ্ছে কবিতা না পড়া। ফিলিস ম্যাকগিনলে, লেখক।। চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য মানুষের ব্লাডারের সহ্যমতার সমানুপাতিক হওয়া উচিত। আলফ্রেড হিচকক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক।।

রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১০

গো-মাংস

আদনান মুকিত
আমাদের বাড়িটা একটু প্রাচীন টাইপের। বাড়ির সামনে উঠোনের মতো একটু জায়গা আছে। একপাশে বাবা বাগান করার চেষ্টা করেছেন। বাগানে ব্যাপক হারে মরিচগাছ লাগানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গাছে একটা মরিচও হয়নি। তবে সেটা নিয়ে বাবাকে একটুও বিচলিত হতে দেখি না। তিনি চেয়ারে বসে নিজহাতে লাগানো মরিচহীন গাছের দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। আমি নিশ্চিত, বাবা ব্যাংকার না হয়ে কবি হলে ‘ওই দেখা যায় মরিচগাছ’ টাইপের কবিতাও লিখে ফেলতেন। গাছের দিকে তাকিয়ে তিনি প্রায়ই বলেন, ‘গাছ থেকে মরিচ না পাই, অক্সিজেন তো পাচ্ছি। গাছের মূল জিনিসই হলো অক্সিজেন, কি বলিস?’ আমি হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ি। বাবা বেশ
শান্তি পান। তিনি সব সময় শান্তিতেই থাকেন। শুধু মামা এলেই তাঁর শান্তি উধাও হয়ে যায়। এমনিতে মামার কোনো কাজ নেই, তবে বাবার
ধারণা, এ বাড়ির শান্তিশৃঙ্খলা ধ্বংস করাই তাঁর প্রধান কাজ। মামার মতো মানুষদের জন্যই নাকি কাজী নজরুল ইসলাম লিখে গেছেন, ‘প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইকোন, আমি ধ্বংস।’ মামাও মনে হয় তা-ই ভাবেন। কদিন হলো তিনি বাড়িতে এসেছেন এবং কিছুণ পরপর মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করছেন। যেমন, গত রাতে তিনি ঘোষণা দিলেন, তিনি কোনো দিন চাকরি করবেন না, শুধু ইন্টারভিউ দিয়ে যাবেন। বাবা জিজ্ঞেস করলেন, কেন? মামা বললেন, তাঁর নাকি চাকরি করার সময় নেই। ইন্টারভিউ দিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিতে চান, তিনি কী জিনিস। শুনেই বাবার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। মামা কোনো পাত্তা না দিয়ে তাঁর বক্তব্য অব্যাহত রাখলেন, ‘বুঝলেন দুলাভাই, অনেক প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দেব। কিন্তু কোনোটাতেই চাকরি করব না। মানুষ জিজ্ঞেস করবে, অবসর সময়ে আপনি কী করেন? আমি বুক ফুলিয়ে বলব, ইন্টারভিউ দিই। তারপর এক শুভ দিনে আমার সব ইন্টারভিউ কার্ড নিয়ে একটা প্রদর্শনীর আয়োজন করব। এমন প্রদর্শনী মানুষ জীবনেও দেখেনি। ভেরি ইউনিক আইডিয়া।’ 
রাতের কথায় বাবার মেজাজ মনে হয় এখনো গরম আছে। উঠোনের চেয়ারে বসে কপাল কুঁচকে গেটের দিকে তাকিয়ে আছেন। লণ খারাপ। মেজাজ ভালো থাকলে বাবার দৃষ্টি থাকত মরিচগাছের দিকে। গেট পেরোলেই রাস্তা। হঠাৎ একটা রিকশা এসে থামল। রিকশা থেকে মামা নামলেন, হাতে ব্যাগ। মামা গেটের ও পাশ থেকেই বললেন, দুলাভাই, ভাংতি ১০ টাকা দিন তো, আমার কাছে সব বড় নোট।
বাবা রাগী ভঙ্গিতে ১০ টাকা দিতে উঠলেন। রিকশাভাড়া মিটিয়ে মামার হাতের ব্যাগের দিকে তাকিয়ে বাবা বললেন,
- তোমার হাতে ওটা কী?
- থলে, দ্য ব্যাগ।
- থলের ভেতরে কী?
- বোমাটোমা নেই। চতুষ্পদ প্রাণীর মাংস। মানে গরুর মাংস। ভাবলাম, ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি, একটু ভালো কিছু খেয়ে যাওয়া উচিত। তাই নিয়ে এলাম, বেশ সস্তায় পেয়েছি।
- কী বললে? তুমি জানো না, গরুর মাংস খেলে অ্যানথ্রাক্স হবে? কোন সাহসে তুমি গরুর মাংস কিনেছ? আমার বাড়িতে এই অ্যানথ্রাক্স নিয়ে তুমি ঢুকতে পারবে না।
- সে কী? বাইরে দাঁড়িয়ে শালা-দুলাভাই ঝগড়া করছি, এটা ভালো দেখায় না, আমার প্রেস্টিজ না থাকতে পারে, আপনার তো আছে। ভেতরে এসে কথা বলি?
- আসতে হলে তোমার মাংস বাইরে রেখে আসো। নো গরুর মাংস ইন মাই হাউস।
- আমার মাংস নয়, দুলাভাই, এটা গরুর মাংস।
- ওই একই হলো। এ নিয়ে তর্কযুদ্ধ করতে চাইলে করতে পারো, তবে মাংস নিয়ে আমি ঢুকতে দেব না।
- ঠিক আছে। বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্রমেদিনী। ওপেন দ্য ডোর।
মামা মাংসের ব্যাগটা বাইরে রাখতেই বাবা দরজা খুললেন। ভেতরে ঢুকেই মামা বললেন,
- দুলাভাই, আপনি অযথা ভয় পাচ্ছেন, জিনিসটা এত মারাÍক নয়। সব মিডিয়ার বাড়াবাড়ি।
- গাধার মতো কথা বোলো না!
- আট জেলায় মাত্র ৪৬টি গরু এ রোগে মারা গেছে। সংখ্যার তুলনায় খুবই কম।
- চুপ গাধা!
- এত গাধা গাধা করবেন না, শেষে অভ্যাস হয়ে যাবে। মানুষ জিজ্ঞেস করবে, ভাই আপনার নাম কী? আপনি বলবেন গাধা! কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে না?
- শোনো, সরকারি হিসাবে দেশে ছয় কোটি গরু-ছাগল-মোষ আছে। এর মধ্যে তোমাকে ধরা হয়েছে কি না বুঝতে পারছি না। ধরা না হলে ভুল হয়েছে। অবিলম্বে ধরা উচিত। সারা দেশের মানুষ গরু খাওয়া বাদ দিয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় রোগ ধরা পড়ছে, গরুর রক্ত খেয়ে অনেক শকুন মারা গেছে, আর তুমি বলছ মিডিয়ার বাড়াবাড়ি? মশকরা  করো?
- আমাদের মন্ত্রীর কথাটা ভুলে গেছেন? আরে শকুন মরবে কীভাবে? দেশে তো শকুনই নেই। আর রোগটা ধরা পড়েছে সিরাজগঞ্জে। সেখান থেকে গরু ঢাকায় আসবে কীভাবে? মাইকেল ফেলপস হলে না হয় সাঁতরে চলে আসত। গরু তো ফেলপস না।
- কিন্তু মানুষ তো আক্রান্ত হচ্ছে। তা ছাড়া গরুও মারা যাচ্ছে। তার কী হবে?
- ওহ দুলাভাই, ১৮ তারিখের পর আর কোনো গরু মারা যায়নি। তা ছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি। এটা আমার কথা না, স্বয়ং মন্ত্রীর কথা। আমি ফাজলামো করতে পারি, মন্ত্রী সাহেব নিশ্চয়ই ফাজলামো করবেন না।
- হুমম, তাহলে উপায়?
- খাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই, দুলাভাই। আপনি অনুমতি দিলে মাংসটা ভেতরে আনতে পারি। অনেক দিন গরুর মাংস খাই না।
- বাবা কিছুই বলছেন দেখে মামা বললেন, নীরবতা সম্মতির লণ। এই, তুই বসে বসে কী করছিস? যা, মাংসের ব্যাগটা ভেতরে নিয়ে আয়।
আমি এক দৌড়ে গেটের কাছে গিয়ে দেখি কোনো ব্যাগই নেই। এদিক-ওদিক খুঁজেও কিছু পেলাম না। মামা এসে বললেন, অলস বালক, এক কেজি মাংস আনতে এতণ লাগে? চড় দিয়ে তোর মাড়ির মাংস ফুলিয়ে ফেলব।
- মামা, কিছুই তো নেই। 
মামা হায় হায় করে উঠলেন। অনেক দূর থেকে ময়লাওয়ালার বাঁশির শব্দ শোনা গেল। মামা মাথায় হাত দিয়ে বসে বললেন, কিছুই বুঝলাম না, মাংস নিল কে?
মাংসের ব্যাগটাকে ময়লার ব্যাগ ভেবে ময়লাওয়ালা যে সেটা গাড়িতে ফেলে দিয়েছে, তা মামা না বুঝলেও আমি ভালোই বুঝেছি। যাক, মামার কথায় ঝুঁকি নিয়ে আর গো-মাংস খেতে হচ্ছে না। এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম।


কার্টুন : রকিবুল হাসান

কোন মন্তব্য নেই: